স্বাধীন বিডি ডেস্ক।। জন্মের ১ সপ্তাহ আগে পিতা চলে যান না ফেরার দেশে, অভিমানে জন্মের ঠিক ২৫ দিনের মাথায় বাবার সাথে “মা” পাড়ি জমান। জন্মদাতা ও গর্ভধারীনিকে চিরতরে হারিয়ে ২৫ দিন বয়সী শিশু মোহাম্মদ আব্দুর রহমান নয়ন এতিম হয়ে যায়। অসহ্য কষ্ট।
মা গার্মেন্টস এ কাজ করার সময় ছকিনা বেগম (ছন্মনাম) এর সাথে সুসম্পর্ক গড়ে উঠে। দুজনের গভীর বন্ধুত্ব। প্রিয় বান্ধবীর মৃত্যুতে ছকিনা নিস্ত্বদ্ধ হয়ে পড়ে।
সংসারে সন্তান জন্ম না দিতে পারায় ছকিনা বেগমকে তাঁর স্বামী তালাক দেয়। তারপর শুরু হয় দুঃখ-দূরদর্শার জীবন। তিনি শতকষ্টের মধ্যে থেকেও নয়নকে লালনপালনের দায়িত্ব নেয় এবং নিজে মাতৃত্বের স্বাদ গ্রহন করেন।
শিশু নয়নের বয়স যখন ছয়, ঠিক তখনি ছকিনা বেগমের সংসারে নেমে আসে অভাব। তাই ছেলে কে নিয়ে ঢাকা থেকে চলে আসে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ। একদিকে ছকিনার অভাব অন্যদিকে অবুঝ শিশুর ক্ষুধার ষন্ত্রনায় ছটফট দেখে তিনি নিরুপায় হয়ে পড়ে। অবশেষে একজনের সুপরামর্শে ছকিনা বেগম ছয় বছরের নয়নকে আল মাহাব্বা হাফিজিয়া এতিমখানা দাখিল মাদ্রাসা দিয়ে দেয়। এতিমখানায় বুকের ধনকে রেখে হাওমাও করে কেঁদেছেন। মা তো এমনি হয়।
উক্ত এতিমখানা ও মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মোহাম্মদ মুজাক্কির হোসেন তাকে লালনপালন ও পড়াশোনার সম্পূর্ণ দায়িত্ব নেন। ৬ বছর বয়সী নয়ন পবিত্র মহাগ্রন্থ আল-কোরআন এর হাফেজ হওয়ার স্বপ্ন দেখে।
মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মোহাম্মদ মুজাক্কির হোসেন নয়নকে নিজের সন্তানের মতো লালনপালন করেন। সেজন্যই মোহাম্মদ আব্দুর রহমান নয়ন মাত্র ৯ বছর বয়সে পবিত্র আল কোরআন এর ৩০ পারা মুখস্ত করেন।
বর্তমানে সে উক্ত আলিয়া মাদ্রাসায় ৫ শ্রেণিতে অধ্যয়নরত আছে এবং পাশাপাশি হিফজ্ শাখায় শিক্ষকতা করছেন।
তার সুমধুর কন্ঠে কোরআন তেলাওয়াত শুনলে মনটা ভরে যায়। ভূবন জুড়ানো তার মুখের হাসি। এ যেন স্রষ্টার অপূর্ব সৃষ্টি। মহান আল্লাহ যেন এতিম ভাই মোহাম্মদ আব্দুর রহমান নয়ন কে সুস্থ ও নেক হায়াত দান করেন।
মো.হাফিজুর রহমানের ফেইবুক ওয়াল থেকে নেয়া
স্বাধীন বিডি ২৪/৭৭ম ০৫৪১৮০৩